বিজয়ের পরও যুদ্ধ !!! |
আজ স্বাধীনতার ৪০ বছর
পূর্ণ হল। যদিও আমরা দেখিনি, বাবা-মা,
ভাই-বোন, মুরুব্বি, ও
বই-পুস্তক থেকে যতটুকু শুনেছি তাতেই মনের স্মৃতিপটে এঁকেছি কিভাবে দীর্ঘ ৯ মাস বহু
ত্যাগের বিনিময়ে আমাদের দেশ স্বাধীন হয়েছে।
যারা এই যুদ্ধে অংশ
নিয়েছিল তাদের প্রতি জানাই শ্রদ্ধা ও ভালবাসা, তাদের নিঃস্বার্থ ত্যাগের মাধ্যমে এই অর্জিত স্বাধীনতা। কিন্তু ভাবতে অবাক
লাগে যারা এত কষ্ট করে এদেশ থেকে হানাদার বাহিনীকে বিতারিত করেছে, আজ তাদের অবস্থা কি? তারা হয়ত স্বাধীনতা এনে
দিয়েছে কিন্তু তাদের স্বাধীনতা কখনই আনতে পারেনি। তারা কে কিভাবে আছে তাদের খোঁজ
কি কখনো নিয়েছি?
সবাই নিজেকে নিয়ে
বেস্ত কে কিভাবে উপরে উঠবে তারই প্রতিযোগিতা চলছে।
প্রতিদিন কিছু না
কিছু খবর আমারা প্রত্র-পত্রিকাতে পেয়ে থাকি এমনি একটি বাস্তব ঘটনা উল্লেখ করি—”এক মুক্তি যোদ্ধা, তার
গ্রামে তিনি একজন ফেরিওলা। তিনি পকেটে একটি টেপ রেকটার নিয়ে ঘুরতেন এবং বাজাতেন।
এটাতে তিনি ৭ই মার্চের ভাষণ বাজাতেন। এটা তার কাছে গর্ভের মনে হলেও কতিপয় বেক্তির
কাছে ঈর্ষান্বিত ও অপ্রিয় মনে হোতো। তিনি গর্ব করত একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে। তার
প্রতি তার সমাজ কি আচরণ করলো ?
সে অবসর সময়ে জাল
বুনত। প্রভাবশালী এক বেক্তি তার ছেড়া জাল সেলাই করতে দিয়েছিল কিন্তু সময়মত ফেরত
না দেয়ায়ে তাকে অসম্মানজনক ভাবে মারধর করে এবং হাসপাতাল যাওয়ার পথেই মৃত্যুবরণ
করেন।”
এ খবরটা পড়ে বুকটা
ফেটে যাচ্ছিল, বিজয়ের মাসে এমন একটি
ঘটনা সত্যি মর্মান্তিক। এরকম অনেক ঘটনায় আছে যা আমাদের অজানা।তার সমাজ তাকে
কিভাবে বঞ্চিত করলো। নিজের নিরাপত্তাটুকু দেইনি । দেশের জন্য কতনাকিছুই করলো কিন্তু
দেশ তাকে কি দিল-মৃত্যু !
এটাই কি তার কাম্য
ছিল ? তার কি অপরাধ ছিল সে
মুক্তিযোদ্ধা ? খবরের কাগজে অসংখ্য খবর পাই-“মুক্তিযোদ্ধার মুখে খাবার নেই”, “তাদের ঘরে দুর্দিন”
সরকারী ভাতাটুকু থেকে তারা বঞ্চিত। কিন্তু, যারা
যুদ্ধাপরাধী তারা- তারা তো এখনও তাদের শোষণ করছে এবং করেই যাচ্ছে।
যারা শহিদ হয়েছেন, তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলছি, তারা তো মৃত্যুকে পরোয়া না করে দেশকে একটি স্বাধীন পতাকা উপহার দিয়েছে।
তাদের কতজনকেই আমারা চিনি বা মনে রেখেছি? আর যারা
মুক্তিযোদ্ধা তারা সমাজ থেকে প্রতিনিয়ত বঞ্চিত হচ্ছে। এ সমাজে তাদের কনো স্থান
নেই।
তবে আমার জাইগা থেকে
আমি বলছি, যুদ্ধ এখনও শেষ হইনি। যেদিন
বাংলাদেশের প্রত্যেক মুক্তিযোদ্ধা এবং সাধারন মানুষের মৌলিক চাহিদা ও সমাজে স্থান
দিতে পারবো তখনি আসবে বিজয়। এ যুদ্ধে আমাদের যুব সমাজের অংশ নিতে হবে। তারা এত
কষ্ট করে বিজয়টি এনেছিল এখন আমাদের উচিৎ তাদের বিজয়টা এনে দেওয়া। এটা আমাদের
দায়িত্ব ও কর্তব্য।
বিজয়টা সার্থক হবে যদি
তাদের বিজয়টা এনে দিতে পারি।
মেহেদী হাসান
১৬/১২/২০০৯